Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

আমিরাতে ভিসা জটিলতার জন্য ‘দেশি দুষ্টচক্র’ দায়ী: লুৎফে সিদ্দিকী

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ০০:৫৯

আমিরাতে ভিসা জটিলতার জন্য ‘দেশি দুষ্টচক্র’ দায়ী: লুৎফে সিদ্দিকী

সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ রয়েছে। এ পরিস্থিতির জন্য ‘বাংলাদেশের ভেতরের দুষ্টচক্রকেই’ দায়ী করেছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

১৬ জুন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্টস সিকিউরিটির (আইসিপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুহাইল সাঈদ আল খায়লির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

বৈঠক শেষে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে লুৎফে সিদ্দিকী জানান, “গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমিরাতে ভিসা ও আবাসন আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরাই সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী। আমাকে জানানো হয়েছে, এখানে মোট অনিয়মকারীদের মধ্যে ২৫ শতাংশেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক।”

তিনি আরো উল্লেখ করেন, এই সংকটের মূল উৎস বাংলাদেশের ভেতরের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন অনিয়ম।

বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশি কর্মীদের খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি অথচ প্রাপ্ত বেতন তুলনামূলকভাবে কম। এর ফলে এক ধরনের দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে, যেখানে নিয়ম লঙ্ঘনের আশঙ্কা বেড়ে যায় বলে জানান তিনি।

লুৎফে সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর এসব অনিয়ম প্রতিরোধে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং, যেসব সময়ে ভিসা নীতিতে সামান্য শিথিলতা এসেছে, সেসব সময় তা অপব্যবহারের সুযোগে পরিণত হয়েছে।

ওভারস্টে (ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও দেশে না ফেরা) ছাড়াও বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে জাল সনদপত্র দাখিলের অভিযোগ রয়েছে, যার কিছুতে সরকারি অনুমোদনের সিলও ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তিনি আরো জানান, “আমি আলাদাভাবে একটি আন্তর্জাতিক রিক্রুটমেন্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও কথা বলেছি, যারা আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী আনে। তারাও এই অভিযোগগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। চলতি বছরের মার্চে আংশিকভাবে ভিসা চালু হওয়ার পর থেকে কিছু মধ্যস্বত্বভোগীর অসাধু আচরণের কথাও আমি শুনেছি।”

বৈঠকে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে, ভিসা ইস্যুতে পারস্পরিক আস্থা ও সদিচ্ছার ভিত্তিতে দুই দেশের সরকারকে কাজ করতে হবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি নতুন কাঠামোর অংশ হিসেবে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও জনগণের সংযোগকে আরো শক্তিশালী করা হবে।

বিশেষ দূত জানান, ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা আবেদনকে আলাদাভাবে বিশ্লেষণ করা হবে। যেমন পারিবারিক ভিসা, নিয়োগকর্তা পরিবর্তনের দেশীয় অনুমতি, পর্যটন ভিসা, দক্ষতা অনুযায়ী কর্মী ভিসা এবং নাবিকদের ভিসা।

তিনি বলেন, “সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো অনিয়মের মূল উৎস চিহ্নিত করে তা সমাধানে বাস্তবভিত্তিক ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া। কারণ এই অনিয়ম শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যতের জন্যও একটি দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক ছায়া ফেলছে।”

২০১২ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন কর্মী ভিসা কার্যত স্থগিত রয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী বসবাস করছেন। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ভিসা জটিলতার কোনো কার্যকর সমাধান হয়নি।

তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ ২৪

Logo