
যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে আলোচিত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল' এর রেমিট্যান্সের ওপর ৩.৫% কর যুক্ত হলে, বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রেমিট্যান্স আয় থেকে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১,৮২০ কোটি টাকা সরাসরি রাজস্বের বাইরে চলে যেতে পারে।
বাংলাদেশ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৩.৯৪ থেকে ৪.২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। বছর শেষে বাংলাদেশ প্রায় ২৬.৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে। এ অর্থ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কর আরোপের প্রত্যক্ষ প্রভাব
– ৩.৫% কর প্রয়োগে যুক্তরাষ্ট্র-উৎপন্ন ৪.২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সে ১৪৯.৪৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সরাসরি রিজার্ভ সংগ্রহে হ্রাস হতে পারে।
– যদিও মোট রেমিট্যান্স আয়ের তুলনায় এটি সামান্য, তবে অর্থনীতির স্ট্রাটেজিক ক্ষেত্র যেমন ভর্তুকি, চিকিৎসা, শিক্ষায় এর প্রভাব পড়তে পারে।
কর বৃদ্ধির কারণে প্রবাসীরা ইনফর্মাল বা হুন্ডির দিকে ঝুঁকতে পারেন।
– গবেষণায় প্রতি ট্রান্সফারে খরচ বর্তমানে ৪.৪% হলে, কর যুক্ত হলে এটি প্রায় ৭.৯% পৌঁছাতে পারে।
– বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে প্রবাহিত হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধি পাওয়া উপার্জন ইঙ্গিত দেয় যে, ফর্মাল চ্যানেলের গুরুত্ব বাড়ছে। তবে কর আরোপে বিরূপ পরিবর্তন আসতে পারে।
বাংলাদেশ সরকারের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে কূটনৈতিক উদ্যোগ চালিয়ে পরিপূর্ণ প্রভাব সম্পর্কে বক্তব্য রাখা।
এছাড়া ফর্মাল রেমিট্যান্স চ্যানেলকে আরো সুবিধাজনক করার উপায় রয়েছে ব্যাংকিং চ্যানেল সাশ্রয়ী করা, ডিজিটাল প্লাটফর্মকে ব্যবহার উপযোগী করা। এর সাথে জনসচেতনতা বাড়িয়ে ফর্মাল সুবিধা বোঝানো জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রের ৩.৫% রেমিট্যান্স করের কারণে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আয়ের সামান্য, কিন্তু একীভূতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পরিমাণ অর্থ রিজার্ভে যেতে পারে। পাশাপাশি ফর্মাল চ্যানেলে প্রবাহিত অর্থ হারিয়ে যেতে পারে, যা অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও নির্ভরযোগ্যতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই অবিলম্বে কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং ডমেস্টিক রেমিট্যান্স চ্যানেল সচল রাখতে সক্রিয় পদক্ষেপ প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ