
২০২৫ সালের মে মাসে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স প্রবাহ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১.৭ শতাংশ বেশি। চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২৭৫১ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঈদুল আজহার আগে প্রবাসীদের দেশে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা, সরকার প্রদত্ত ২.৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা, এবং হুন্ডি চ্যানেলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এই প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ। এছাড়া ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর হার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডলারের সংকট কমে এসেছে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা দরে ডলার কিনছে, যদিও খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ মাসে (জুন) রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত থাকলে মোট আয় ৩০০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ হবে।
প্রবাসী আয় হলো দেশে মার্কিন ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না বা কোনো দায় পরিশোধ করার দরকার পড়ে না। অন্যদিকে রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। এছাড়া বিদেশি ঋণ পরিশোধেও ডলারের প্রয়োজন হয়। সার্বিকভাবে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের রিজার্ভ বা মজুত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক