সৌদি আরবে অভিবাসী শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে এইচআরডব্লিউর সতর্কতা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ২২:০৭

সৌদি আরবে ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ এবং অন্যান্য মেগা-প্রকল্পের নির্মাণকাজে নিযুক্ত অভিবাসী শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সম্প্রতি একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি সৌদি আরবের শ্রমিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুতর ঘাটতি এবং অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি অবহেলার চিত্র তুলে ধরেছে।
নির্মাণকাজে প্রাণহানির ভয়াবহ চিত্র
এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সৌদি আরবে নির্মাণকাজে নিযুক্ত অভিবাসী শ্রমিকরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, উচ্চতা থেকে পড়ে যাওয়া এবং মাথা বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। এই মৃত্যুগুলোর অনেকটাই প্রতিরোধযোগ্য ছিল, কিন্তু সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।
মৃত্যুর কারণ গোপন ও ক্ষতিপূরণে জটিলতা
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, অনেক সময় এই মৃত্যুগুলোকে "প্রাকৃতিক মৃত্যু" হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। ফলে সঠিক তদন্ত হয় না এবং মৃত শ্রমিকদের পরিবার ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হয়। কিছু ক্ষেত্রে, মৃতদেহ ফেরত পাঠাতে বিলম্ব হয় বা পরিবারকে স্থানীয়ভাবে দাফনের জন্য চাপ দেওয়া হয়।
ফিফা ও সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান
এইচআরডব্লিউ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো ফিফা এবং সৌদি কর্তৃপক্ষকে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মৃত্যুর সঠিক তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে। তারা সতর্ক করেছে, যদি অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে আরো অনেক শ্রমিকের মৃত্যু হতে পারে।
বাংলাদেশের শ্রমিকদের অবস্থা
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সৌদি আরবে নির্মাণকাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপাল থেকে আগত। এই শ্রমিকরা দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করলেও প্রায়ই সঠিক মজুরি পান না এবং নিরাপত্তাহীন পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হন।
এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনটি সৌদি আরবে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি অবহেলা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছে। বিশ্বকাপের মতো আন্তর্জাতিক ইভেন্টের আয়োজক দেশ হিসেবে সৌদি আরবের দায়িত্ব রয়েছে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করার। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সৌদি কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, যাতে তারা শ্রমিকদের সুরক্ষা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
ডেস্ক রিপোর্ট: মাইগ্রেশন কনসার্ন