১২ মে, আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। এ বছরের প্রতিপাদ্য- “আমাদের নার্স, আমাদের ভবিষ্যৎ; সেবার অর্থনৈতিক শক্তি”। এই দিনে বিশ্বজুড়ে নার্সদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাদেশেও নার্সরা স্বাস্থ্যসেবার অগ্রভাগে থেকে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তবে তাদের পেশাগত জীবন নানা সংকটে জর্জরিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, বাংলাদেশে চিকিৎসাসেবায় ৩ লাখ ১০ হাজার ৫০০ নার্স ও মিডওয়াইফারি প্রয়োজন। বর্তমানে দেশে ১ লাখ ৩ হাজার ১৫১ জন নার্স রয়েছেন, যা চাহিদার তুলনায় মাত্র ৩৩.৭৭ শতাংশ। প্রতি বছর গড়ে ১২ হাজার নার্স পেশায় যুক্ত হচ্ছেন, যা ঘাটতি পূরণে অপর্যাপ্ত।

সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটসের (এসএনএসআর) জরিপে দেখা গেছে, ৯২ শতাংশ নার্স কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বৈরিতা, রোগীর স্বজনের দুর্ব্যবহার, এবং পেশাগত জীবনের নানা চাপ এই মানসিক সমস্যার প্রধান কারণ।

জরিপ অনুযায়ী, ৯৬ শতাংশ নার্স কম বেতনে কাজ করছেন। বেতন কাঠামো পুনর্বিবেচনা এবং উপযুক্ত স্বীকৃতি ও সম্মান নিশ্চিত করা জরুরি।

বাংলাদেশি নার্সদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে, তবে সঠিক নীতিমালা ও আইনি জটিলতার কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি নার্সদের চাহিদা রয়েছে।

সুপারিশ ও করণীয়

- নিয়োগ বৃদ্ধি: সরকারি ও বেসরকারি খাতে নার্স নিয়োগ বৃদ্ধি করা।

- কর্মপরিবেশ উন্নয়ন: নার্সদের জন্য নিরাপদ ও সহায়ক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা।

- প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন: নার্সদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করা।

- বেতন ও সুযোগ-সুবিধা: নার্সদের জন্য উপযুক্ত বেতন ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।

আন্তর্জাতিক নার্স দিবস ২০২৫ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, নার্সরা আমাদের স্বাস্থ্যসেবার মূল ভিত্তি। তাদের সঠিক মর্যাদা, প্রশিক্ষণ ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করেই আমরা একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে পারি।

মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট