
বাংলাদেশে সম্প্রতি জাতিসংঘের নেতৃত্বে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো, রাখাইনের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে আটকে পড়া রোহিঙ্গা, রাখাইন ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর কাছে ত্রাণ পৌঁছানো। তবে এই করিডোর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একাধিক গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে।
সহায়তা অপব্যবহারের আশঙ্কা
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং রাখাইন সম্প্রদায়ের মধ্যে রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাবের কারণে সহায়তা সুষ্ঠুভাবে বিতরণ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যথাযথ নজরদারি ছাড়া এই সহায়তা সংঘাতকে আরো উসকে দিতে পারে, ফলে সবচেয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গা, রাখাইন ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরা সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ
এই করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে সরাসরি জড়িয়ে পড়তে পারে, যা দেশের কূটনৈতিক অবস্থান ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। রাখাইনে চীন, রাশিয়া ও ভারতের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে; এই করিডোর তাদের স্বার্থের সঙ্গে সংঘর্ষে আসতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
করিডোরের ভবিষ্যৎ
এই করিডোরের মাধ্যমে সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হলেও এটি মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা অপব্যবহৃত হতে পারে। তারা এই সহায়তা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে, যা সংঘাতকে আরো দীর্ঘায়িত করতে পারে।
বাংলাদেশের করণীয়
বাংলাদেশের উচিত এই করিডোর বাস্তবায়নের আগে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো গভীরভাবে মূল্যায়ন করা। যথাযথ নজরদারি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ছাড়া এই করিডোর বাস্তবায়ন দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
তথ্যসূত্র: লেখক: ড. আজিম ইব্রাহিম, ডিরেক্টর, নিউজলাইন ইনস্টিটিউট ফর পলিসি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি, ওয়াশিংটন, যুক্তরা্ষ্ট্র