Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

স্বাস্থ্য খাতে প্রবাসী বিনিয়োগে বিশেষ বন্ড চালুর সুপারিশ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ২২:৩৫

স্বাস্থ্য খাতে প্রবাসী বিনিয়োগে বিশেষ বন্ড চালুর সুপারিশ

দেশের স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করতে প্রবাসীদের সরাসরি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে 'স্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রবাসী বন্ড' চালুর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে বিলাসবহুল ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার ওপর পৃথক স্বাস্থ্য কর আরোপের প্রস্তাবও দিয়েছে কমিশন।

৫ মে সকাল ১১টায় কমিশন তাদের স্বাস্থ্য খাত সংস্কারবিষয়ক প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দেয়। 'স্বাস্থ্য সবার জন্য অধিকার' প্রতিপাদ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মোট ৩৭টি সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশন জানিয়েছে, স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ এবং জাতীয় বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। এতে স্বাস্থ্যসেবার পরিসর বাড়বে, ব্যক্তিগত ব্যয়ের চাপ কমবে এবং জনগণের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

টেকসই অর্থায়নের নতুন উৎস হিসেবে কমিশন 'স্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রবাসী বন্ড' চালুর সুপারিশ করেছে, যা হবে সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত। এই বন্ডের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সরাসরি দেশের স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারবেন। বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক মুনাফার হার, কর ছাড় বা কর রেয়াত এবং বৈদেশিক মুদ্রায় বিনিয়োগের সুযোগ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই বন্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো উন্নয়ন, সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়ন, ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্রযুক্তির বিস্তার, সামাজিক স্বাস্থ্য বীমা এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রস্তুতির মতো খাতে ব্যয় করা হবে।

কমিশন পরামর্শ দিয়েছে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে একটি স্বচ্ছ, দক্ষ ও যৌথ প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করতে হবে, যেখানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে তহবিল পরিচালনা করবে।

প্রবাসীদের সম্পৃক্ত করতে দূতাবাস, কনস্যুলেট এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এতে তুলে ধরা হবে তাদের বিনিয়োগ কীভাবে দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যবহার হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অনুসারে প্রবাসী বন্ড হতে পারে উন্নয়ন প্রকল্প অর্থায়নের একটি কার্যকর মাধ্যম। উদাহরণস্বরূপ, ভারত প্রবাসী বন্ডের মাধ্যমে ১১ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে, যা বিভিন্ন অবকাঠামো ও স্বাস্থ্য প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়েছে। ইথিওপিয়াও ডায়াসপোরা বন্ড ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ও রেল খাতে অর্থায়ন করেছে।

স্বাস্থ্য খাতে টেকসই অর্থায়নের আরেকটি উৎস হিসেবে কমিশন বিলাসবহুল পণ্য ও সেবার ওপর পৃথক স্বাস্থ্য কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে। এই করের আওতায় রয়েছে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রেস্টুরেন্ট, তিন তারকা ও তার ঊর্ধ্বের হোটেল, বিলাসবহুল শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, উচ্চমূল্যের ইলেকট্রনিক্স, বিলাসবহুল স্পা এবং অভিজাত প্রাইভেট ক্লাব। কমিশনের মতে, এই কর এমনভাবে নকশা করতে হবে, যাতে নিম্নআয়ের জনগণের ওপর কোনো চাপ না পড়ে।

স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্যে আবগারি কর বাড়ানোর সুপারিশ

এছাড়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ভোগ্যপণ্যের ওপর আবগারি কর আরোপ বা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতের জন্য নির্ধারিত বরাদ্দ সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন।

কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো এবং স্বাস্থ্য খাতে টেকসই অর্থায়নের লক্ষ্যে তামাক, চিনি-যুক্ত পানীয়, ক্যাফেইনসমৃদ্ধ এনার্জি ড্রিংক, বুকের দুধের বিকল্প খাদ্য, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণযুক্ত ভাজা স্ন্যাকস, উচ্চমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত ইনস্ট্যান্ট নুডলস এবং কনডেন্সড মিল্কের মতো পণ্যের ওপর আবগারি কর আরোপ বা বৃদ্ধি করতে হবে।

একই সঙ্গে, স্বাস্থ্য খাতে পূর্বনির্ধারিত বরাদ্দ সংরক্ষণ করতে হবে।

তথ্যসূত্র: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

Logo