
রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী (বিপিএম৬) ৩০ এপ্রিল দেশের রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ২০৫ কোটি বা ২২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। গত মার্চ শেষে এ রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। সে হিসাবে এপ্রিলে প্রায় ১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ বেড়েছে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন খান জানান, ‘অতীতের এলসি দায় ও বকেয়া পরিশোধের পরও এপ্রিল শেষে দেশের রিজার্ভ ভালো অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। বিপিএম৬ অনুযায়ী আমাদের রিজার্ভ এখন ২২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবায়নে গ্রস রিজার্ভ ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আশা করছি, রিজার্ভের এ উন্নতি আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়া আমদানি বিল পরিশোধ করা হবে। মার্চ ও এপ্রিলের আকুর বিল হবে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে আগামী সপ্তাহে রিজার্ভ থেকে এক ধাক্কায় দেড় বিলিয়ন ডলার কমে যাবে। তবে রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দ্রুতই তা ২২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান তথা গত বছরের ৫ আগস্ট থেকেই দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে প্রবাসীরা ৪ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার বেশি পাঠিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ।
রেমিট্যান্সের এ উচ্চ প্রবৃদ্ধি এপ্রিলেও অব্যাহত ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনেই প্রবাসীরা ২২৭ কোটি বা ২ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২০২৪ সালের পুরো এপ্রিলে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধির দিকে এগোচ্ছে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক বণিকবার্তা