লিবিয়ায় ২৭ বাংলাদেশিকে জিম্মি ও নির্যাতন, মূলহোতা গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৭

লিবিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ২৭ বাংলাদেশিকে জিম্মি করে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মানব পাচার চক্রের মূলহোতা জাহিদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
২৫ এপ্রিল র্যাব-৫ এর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ জানান, ২৩ এপ্রিল রাতে নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার সিঙ্গারা পাড়া এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, জাহিদ দীর্ঘদিন তিউনিসিয়া ও লিবিয়ায় অবস্থান করছিলেন। সেখানকার আঙ্গুর বাগান ও বাজারের ভিডিও করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতেন এবং দাবি করতেন, তিনি ইতালিতে আছেন। কুড়িগ্রামের ইয়াকুব আলী এসব ভিডিও দেখে ইতালিতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে জাহিদ তাকে সহায়তার আশ্বাস দেন।
ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জাহিদ ইয়াকুবের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা নেওয়ার পর ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ইয়াকুবসহ ২৬ জনকে দুবাই পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাদের নাইজার ও পরে আলজেরিয়ায় নেওয়া হয় বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, আলজেরিয়ায় পৌঁছানোর পর স্থানীয় পুলিশ তাদের আটক করে এবং ২১ দিন আটক রাখে।
পরবর্তী সময়ে তিউনিসিয়া হয়ে তাদের লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জাহিদ ও তার ১০ সদস্যের চক্র একটি বাড়িতে তাদের জিম্মি করে রাখে।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, তারা ভুক্তভোগীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। পরে সেগুলো পরিবারে পাঠিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে।
ঘটনাটি বাংলাদেশে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের হস্তক্ষেপে ইয়াকুবসহ অন্যদের উদ্ধার ও দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
এদিকে, ঘটনার পর জাহিদ বাংলাদেশে ফিরে আসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য কুড়িগ্রাম থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এর আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে ইয়াকুব কুড়িগ্রাম সদর থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
তথ্যসূত্র: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড