রাশিয়ায় নাগরিকত্ব ও চাকরির প্রলোভনে যাচ্ছে যুদ্ধের ময়দানে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৪

২০২৫ সালের শুরু থেকে রাশিয়ায় উচ্চ বেতনের চাকরি ও নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় পাড়ি জমিয়ে এখন প্রতারণার শিকার হয়ে সরাসরি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িত হয়েছেন একাধিক বাংলাদেশি নাগরিক। ইতোমধ্যে এই ঘটনায় অন্তত একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত এবং নিখোঁজ রয়েছেন।
জানা গেছে, ঢাকার কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি; যেমন ‘ড্রিম হোম ট্রাভেলস’ ও ‘তামান্না ট্রাভেল এজেন্সি’ বাংলাদেশিদের রাশিয়া ও ইউরোপে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের প্রথমে সৌদি আরবে পাঠায়। এরপর সেখান থেকে ‘ট্যুরিস্ট ভিসা’র মাধ্যমে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর তাদের সামান্য প্রশিক্ষণ দিয়ে সরাসরি যুদ্ধের মাঠে পাঠানো হয়।
রাজবাড়ীর আরমান মন্ডল এমনই এক ভুক্তভোগী, যিনি রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডন শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। একটি মাইন বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর আহত হন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে একজন মানব পাচারকারীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিমানবন্দরগুলোতেও রাশিয়াগামী যাত্রীদের বিষয়ে বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে।
নাটোর জেলার ২৮ বছর বয়সী হুমায়ুন কবির চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি ইউক্রেন সীমান্তে ড্রোন হামলায় নিহত হন। তার শ্যালক রহমান আলী এখনো রুশ বাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা দুজনই রাশিয়ায় উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভনে গিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছান।
মস্কোয় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, যারা এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং দেশে ফিরতে চান, তারা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
এই ঘটনার পেছনে থাকা প্রতারক চক্রকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে বিদেশে চাকরি করতে ইচ্ছুক নাগরিকদের সচেতনতা বাড়ানো এবং বৈধ প্রক্রিয়ায় বিদেশে যাওয়ার গুরুত্ব বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে ক্যাম্পেইন চালানো সময়ের দাবি।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস