Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেট চান না বায়রার সদস্যরা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৩

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেট চান না বায়রার সদস্যরা

কর্মী পাঠাতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে সই করা বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক সংশোধনের দাবি তুলেছেন রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বায়রার সদস্যরা। মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট (চক্র) চান না তারা। এ শ্রমবাজার কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য নয়, বরং সব বৈধ এজেন্সির জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে হবে। কম খরচে কর্মী পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে।

২১ এপ্রিল দুপুরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে এসব কথা বলেছেন বায়রার সদস্যরা। এতে আরো বলা হয়, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের বিতর্কিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত অনলাইন সফটওয়্যার বাতিল করার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের কাছে দাবি জানাতে হবে। সিন্ডিকেটের হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট করে হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন সিন্ডিকেটের হোতা রুহুল আমিন ওরফে স্বপন ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম বিন আবদুন নূর ওরফে আমিন নূর। বর্তমানে রাজনীতিতে প্রভাবশালী কিছু নেতাকে নিয়ে তারা নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, সিন্ডিকেট ছাড়া মালয়েশিয়া কর্মী নেবে না, যা মোটেই সত্য নয়।

৪৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের স্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বায়রার সদস্যরা। তাদের পক্ষ হয়ে স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন বায়রার সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াজুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট নোমান চৌধুরী, বিএনপির ঢাকা জেলা সভাপতি ও বায়রার সদস্য খন্দকার আবু আশফাক, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও আকবর হোসেন, সাবেক সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য মোস্তফা মাহমুদ।

রিয়াজুল ইসলাম, খন্দকার আবু আশফাক, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও আকবর হোসেন সিনিয়র সচিবের কক্ষে আলোচনা করেন। স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের খন্দকার আবু আশফাক বলেন, আগের সিন্ডিকেট থেকে কিছু বাদ দিয়ে নতুন কাউকে যুক্ত করার চেষ্টা করছে। এবার কোনোভাবেই সিন্ডিকেট হতে দেওয়া হবে না, প্রতিরোধ করা হবে। বিএনপির কেউ সিন্ডিকেটে বিশ্বাসী নয়। যদি কেউ সিন্ডিকেটে যায়, ব্যক্তি হিসেবে যাবে, দল হিসেবে নয়।

মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ও সিনিয়র সচিবের দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। সিনিয়র সচিবের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। সরকারও সিন্ডিকেট চায় না বলে সচিব জানিয়েছেন। সমঝোতা স্মারক সংশোধনে তারা কাজ করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।

কম খরচে কর্মী পাঠানোর একটি বিকল্প উপায়ও তুলে ধরা হয়েছে স্মারকলিপিতে। এতে বলা হয়, সরকারিভাবে বিএমইটি আগ্রহী কর্মীদের ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) তৈরি করতে পারে। সেই ডেটাবেজ থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী সংগ্রহ করবে। সরকার নির্ধারিত খরচ ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেবেন কর্মী। পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবে বিএমইটি।

তারা অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেটকে গতবার কর্মীপ্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার রিঙ্গিত বা ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিত অনলাইন সফটওয়্যারের মালিকানা প্রতিষ্ঠান বেস্টিনেট, যার মালিক আমিন নূর। দেশ থেকে এ টাকা গ্রহণ করতেন তার স্থানীয় প্রতিনিধি রুহুল আমিন। মালয়েশিয়া শ্রমবাজার ওই দুজন ব্যক্তির কাছে জিম্মি ছিল। এতে মালয়েশিয়া যেতে কর্মীর খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, মালয়েশিয়া ১৪টি দেশ থেকে কর্মী নিলেও কোনো দেশের জন্য নির্দিষ্ট এজেন্সিকে বাছাই করে দেওয়া হয় না। ওই সব দেশ থেকে সব এজেন্সি কর্মী পাঠাতে পারে। গত সরকারের আমলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপরিকল্পিতভাবে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষর হওয়া সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়া সরকারকে বাছাই করার দায়িত্ব প্রদানের মধ্য দিয়ে সিন্ডিকেটের বীজ বপন করা হয়।

তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো


Logo