নিউজিল্যান্ড শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়াচ্ছে কর্মঘণ্টা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪১

নিউজিল্যান্ড সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কয়েকটি ঘোষণা দিয়েছে। সপ্তাহে কর্মঘণ্টা বাড়ছে আর আগামী ৯ বছরে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়ানো হবে। শিক্ষা থেকে রাজস্ব দ্বিগুণ করতেই এমন বড় পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড সরকার। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০৩৪ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষাবাজারের আকার ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন নিউজিল্যান্ড ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাতে।
ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, আগামী ৩ নভেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন। এটি ‘International Education: Going for Growth’ নামের নতুন শিক্ষানীতি পরিকল্পনার অংশ। অভিবাসন নীতিতে নমনীয়তা আনায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আরো আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে যাচ্ছে দেশটি।
যেসব পরিবর্তন আসছে
কাজের অনুমতির ক্ষেত্রে সপ্তাহে ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজের সুযোগ পাবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ম শুধু পূর্ণকালীন শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং এক সেমিস্টারের স্টাডি অ্যাব্রড বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীরাও এর আওতায় আসবেন। বেশিসংখ্যক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এ সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি আগের তুলনায় বাড়ানো হচ্ছে কাজের ক্ষেত্রও। এ বছরের ৩ নভেম্বরের পর ইস্যু হওয়া সব নতুন শিক্ষার্থী ভিসায় এ সুবিধা পাবেন। আগে ভিসা নেওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ সুযোগ পেতে “ভ্যারিয়েশন অব কন্ডিশন” আবেদন করতে হবে।
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী এরিকা স্ট্যানফোর্ড এক বিবৃতিতে জানান, ‘২০২৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। আমরা সেই প্রবৃদ্ধিকে আরো গতিশীল করতে চাই।’ বর্তমানে আন্তর্জাতিক শিক্ষাবাজার থেকে নিউজিল্যান্ডের অর্থনীতিতে বছরে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন নিউজিল্যান্ড ডলার আয় হয়। সরকার সেটিকে আগামী এক দশকে দ্বিগুণ করতে চায়। ২০২৪ সালে যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৭০০, ২০২৭ সালে সেই সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার এবং ২০৩৪ সালের মধ্যে ১ লাখ ১৯ হাজারে উন্নীত করতে চায়।
এসব উদ্যোগের ফলে যুক্তরাজ্য, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় নিউজিল্যান্ডে এখন শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ ও পড়াশোনার ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হবে। এসব সুযোগ ছাত্রছাত্রীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশ যেখানে ঘরভাড়ার চাপে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানোর দিকে ঝুঁকছে, সেখানে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থানে নিউজিল্যান্ড। দেশটি মনে করছে, আন্তর্জাতিক শিক্ষাব্যবস্থা অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত, যা বহুমুখী উন্নয়নেও ভূমিকা রাখে।
নতুন এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নিউজিল্যান্ড শুধু বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আরো আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হবে না, একই সঙ্গে স্থানীয় শ্রমবাজারেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো