Logo
×

Follow Us

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার ‘ক্লাইমেট ভিসা’

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৮

অস্ট্রেলিয়ার ‘ক্লাইমেট ভিসা’

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র তুভালুর জন্য অস্ট্রেলিয়া চালু করেছে বিশ্বের প্রথম ‘ক্লাইমেট ভিসা’, যা এখন আঞ্চলিক জলবায়ু-অবস্থান নীতির মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তুভালুর সংকট: অস্তিত্বের প্রশ্নে

- জনসংখ্যা: প্রায় ১১ হাজার

- ভূগোল: ৯টি নিম্ন-উচ্চতার প্রবাল দ্বীপ, গড় উচ্চতা ২ মিটার

- বিপদ: ২০৫০ সালের মধ্যে অধিকাংশ দ্বীপ সম্পূর্ণভাবে পানির নিচে চলে যেতে পারে

- রাজধানী ফুনাফুতি: একটি সরু ভূখণ্ড, যেখানে ৬০ শতাংশ মানুষ বসবাস করেন

‘ফালেপিলি ইউনিয়ন ট্রিটি’ ও ক্লাইমেট ভিসা

২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়া ও তুভালুর মধ্যে স্বাক্ষরিত ফালেপিলি ইউনিয়ন ট্রিটির আওতায় চালু হয়েছে এই বিশেষ ভিসা। প্রতি বছর ২৮০ জন তুভালু নাগরিক অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস, কাজ ও পড়াশোনার সুযোগ পাবেন। ভিসা পেতে চাকরি বা কোর্সে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। ভিসার জন্য নির্বাচন হবে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে, যেখানে আবেদনকারীদের বয়স ১৮ বছরের বেশি এবং তুভালুতে জন্ম বা পিতামাতার জন্ম সেখানে হতে হবে। এছাড়া প্রতিবন্ধী, দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরাও এই ভিসার আওতায় আসতে পারবেন।

সুবিধাসমূহ:

- অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের সমপর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, পরিবারভিত্তিক ভাতা ও শিশু সহায়তা

- অসীম যাতায়াতের স্বাধীনতা: তুভালু ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অবাধ যাতায়াত

- সার্বভৌমত্ব রক্ষা: তুভালু যদি বসবাস–অযোগ্য হয়ে পড়ে, তবুও তার রাষ্ট্রীয় পরিচয় অক্ষুণ্ণ থাকবে

চ্যালেঞ্জ ও সমালোচনা

- প্রতি বছর মাত্র ২৮০ জন সুযোগ পাবেন, ফলে প্রথম ব্যাচে আবেদনকারীদের অপেক্ষা ১০ বছরের বেশি হতে পারে

- ‘ব্রেইন ড্রেইন’–এর আশঙ্কা: দক্ষ জনশক্তি দেশ ছেড়ে গেলে অর্থনীতি দুর্বল হতে পারে

- সাংস্কৃতিক বিচ্ছিন্নতা: পূর্বপুরুষের ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জাতীয় পরিচয় হারানোর ভয়

- ভিসা ‘শরণার্থী’ নয়: এটি জলবায়ুভিত্তিক অভিবাসন পথ, শরণার্থী-স্বত্ব নয়

বৈশ্বিক প্রভাব

এই ভিসা এখন মালদ্বীপ, মার্শাল আইল্যান্ডস, কিরিবাতির মতো অন্যান্য ডুবে যাওয়া দ্বীপরাষ্ট্রের জন্য একটি সম্ভাব্য মডেল। জাতিসংঘের গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটির প্রধান কামাল আমাকরানে বলেন, “এটি শরণার্থী নয়, এটি ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি’, যেখানে মানুষ নিজের সময়মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে, মর্যাদা বজায় রেখে।”

এই ভিসা শুধু অভিবাসনের পথ নয়, এটি জলবায়ু–বিচ্যুতি মোকাবিলায় মানবিক ন্যায়ের প্রতীক।

তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে

Logo