Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

হজ ফ্লাইট শুরু, ঢাকাতেই দুই দেশের ইমিগ্রেশন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪০

হজ ফ্লাইট শুরু, ঢাকাতেই দুই দেশের ইমিগ্রেশন

দেশের হজযাত্রীদের কমবেশি ৯৫ শতাংশই সৌদি আরবে যান ঢাকার হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে। এ বছর ৮৭ হাজার ১০০ হজযাত্রী বাংলাদেশ থেকে পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এবারো ‘রোড টু মক্কা’ কর্মসূচির আওতায় ঢাকাতেই দুই দেশের ইমিগ্রেশন হবে যাত্রীদের। পবিত্র হজ পালনের লক্ষ্যে সোমবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে গেছে হজ ফ্লাইট। চলবে ৩১ মে পর্যন্ত।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, রাজধানীর আশকোনার হজ ক্যাম্পেই ঢাকা থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে যাওয়া যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে। সৌদি আরব থেকে আসা ইমিগ্রেশনের ৭৫ সদস্যদের একটি দল শাহজালাল বিমানবন্দরে বসে সে দেশের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করবে। এতে হজযাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। অবশ্য ফেরার সময় হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন সৌদি আরবেই করতে হবে। আর সিলেট ও চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট দিয়ে গমনকারী যাত্রীদের সৌদি আরবের আগমনী ইমিগ্রেশন সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে।

এ বছরের হজ ফ্লাইট উদ্বোধন করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। সোমবার সন্ধ্যায় আশকোনা হজ ক্যাম্পে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫ সালের (হিজরি ১৪৪৬) হজ ফ্লাইটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। সোমবার রাত ২টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশি হজযাত্রী বহনকারী প্রথম বিমানটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন অপারেশন্স) এ কে এম আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন সহজ করতে হজ ক্যাম্পে যারা কাজ করবেন, তাদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ এবার কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া নির্বিঘ্নে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, প্রতিবারের মতো এবারো সর্বোচ্চসংখ্যক হজযাত্রী আশকোনা হজ ক্যাম্প হয়ে সৌদি আরবে যাবেন। তিনটি এয়ারলাইন্স হজযাত্রী পরিবহন করবে।

এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিমানবন্দর দিয়ে হজযাত্রী পরিবহন করবে। সৌদি এয়ারলাইন্স ও ফ্লাইনাস এয়ার শুধু শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে যাত্রী পরিবহন করবে।

১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন)। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯০০ জন্য এবার হজে যাবেন। হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হজের আগে ১১৮টি এবং হজের পরে ১০৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। সৌদি এয়ারলাইন্স হজের আগে ৮০টি এবং হজের পরে ৭৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। আর ফ্লাইনাস এয়ার হজের আগে ৩৪টি এবং হজের পরে ৩৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। হাজিদের নিয়ে প্রথম ফিরতি ফ্লাইট আসবে ১০ জুন এবং শেষ ফিরতি ফ্লাইট আসবে ১০ জুলাই।

ঢাকা দিয়ে বেশি হজযাত্রী যাওয়ায় শাহজালাল বিমানবন্দর ও ইমিগ্রেশনে বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিগত ছয় বছরের হজযাত্রী পরিবহন ও ইমিগ্রেশনের তথ্য আমলে নিয়েছে সরকার। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে হজ ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত এক সভায় ওই তথ্য তুলে ধরা হয়।

সরকারের কাছে থাকা সেই তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, করোনার সময় ছাড়া গত কয়েক বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখের বেশি মানুষ সৌদি আরবে হজ করতে গেছেন। ২০১৭ সালে হজের জন্য সৌদি আরব যান ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৩৮। এর মধ্যে শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে ১০ হাজার ৭৭৩ জন এবং সিলেট হয়ে যান ২ হাজার ৫১০ জন। ২০১৮ সালে যান ১ লাখ ২৭ হাজার ২৮৭ জন। এর মধ্যে শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৪০ জন, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে ৮ হাজার ৭২৫ জন এবং সিলেট বিমানবন্দর হয়ে যান ১ হাজার ৬২২ জন।

হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশনের এই হিসাবকে সামনে রেখে এবার আশকোনা হজ ক্যাম্পে বাংলাদেশ বিমানের যাত্রীদের জন্য ১০টি, সৌদি এয়ারলাইন্সের জন্য ১০টি এবং ফ্লাইনাসের জন্য ৬টি ডেস্ক রাখা হয়েছে।

সর্বশেষ ২০২৪ সালে হজের খরচ বেড়ে যায়। গত বছর হজযাত্রীর সংখ্যাও কমে ৮৫ হাজার ৪ জনে দাঁড়ায়। এবার হজে যাচ্ছেন ৮৭ হাজার ১০০ জন।

এ ছাড়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে যেসব হাজি নিয়মিত ফ্লাইটে বহির্গমন করবেন, তাদের জন্যও ২ নম্বর বহির্গমন ইমিগ্রেশন টার্মিনালেও ১২টি ডেস্ক প্রস্তুত থাকবে।

ইমিগ্রেশন সূত্র বলছে, বিগত বছরগুলোতে হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পরেও যাত্রীদের তথ্য যাচাইয়ে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়েছে। এ জন্য ইমিগ্রেশন সেবা সহজীকরণ এবং ১০-১৫ সেকেন্ডের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য যাত্রীদের তথ্য আগে থেকেই ইমিগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে ইনপুট দেওয়ার ক্ষেত্রেও এবার অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে।

তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো

Logo