মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়া মিয়ানমার ও বাংলাদেশের অভিবাসীরা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য মানব পাচারকারী চক্রকে তারা জনপ্রতি ১৩ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ গাজার রিংগিত অর্থ প্রদান করেছিলেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় চার লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা।  

মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যের পুলিশ প্রধান দাতুক আদজলি আবু শাহ জানান, বিপুল অর্থ জোগাড় করতে এসব অভিবাসী তাদের জমি, বাড়ি ও গবাদি পশু বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এত টাকা দেওয়ার পরও তাদের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে অবৈধভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।  

রোববার মালয়েশিয়া পুলিশ জানায়, সীমান্তের কাছে অভিবাসী বোঝাই একটি নৌকা ডুবে যায়। এ ঘটনায় বহু মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। মালয়েশিয়ার সামুদ্রিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ১০ জনকে জীবিত এবং একজন রোহিঙ্গা নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।  

উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন মিয়ানমারের নাগরিক, দুইজন রোহিঙ্গা পুরুষ এবং একজন বাংলাদেশি পুরুষ রয়েছেন।  

মালয়েশিয়ার সামুদ্রিক কর্তৃপক্ষের পরিচালক ফার্স্ট অ্যাডমিরাল রোমলি মোস্তফা জানান, তিন দিন আগে মিয়ানমারের বুথিডং এলাকা থেকে একটি বড় নৌকা প্রায় ৩০০ জন যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। সীমান্তের কাছে পৌঁছালে কর্তৃপক্ষের নজর এড়াতে যাত্রীদের তিনটি ছোট নৌকায় ভাগ করে দেওয়া হয়, প্রতিটি নৌকায় প্রায় ৯০-১০০ জন ছিল।  

ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্যে একটি নৌকা তিন দিন আগে উল্টে যায়। বাকি দুটি নৌকার কী হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।  

উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে মালয়েশিয়ার কাছাকাছি পৌঁছাতে তাদের প্রায় এক মাস সময় লেগেছে। নৌকাডুবির পর তারা তিন থেকে চার দিন ধরে সমুদ্রে ভেসে ছিলেন। তারা আরো জানান, প্রথমে একটি বড় নৌকায় যাত্রা শুরু করলেও পরে ছোট নৌকায় ভাগ করে দেওয়া হয়।