মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড উপকূলে অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নৌকাটিতে মূলত মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীরা ছিলেন, যারা অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন।

সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, ৯ নভেম্বর ভোরে নৌকাটি মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে ডুবে যায়। স্থানীয় জেলেরা প্রথমে ঘটনাটি লক্ষ্য করেন এবং উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। পরে মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ড ও থাই কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে উদ্ধারকাজ চালায়। এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে নিখোঁজদের সংখ্যা এখনো স্পষ্ট নয়।  

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নৌকাটিতে থাকা অভিবাসীরা মূলত রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি শ্রমিক ছিলেন। তারা দালালের মাধ্যমে বিপুল অর্থ দিয়ে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য, কারণ সেখানে কাজের সুযোগ তুলনামূলক বেশি। তবে অবৈধ পথে প্রবেশ করতে গিয়ে প্রায়ই তারা প্রাণঘাতী ঝুঁকিতে পড়েন।  

মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ড জানিয়েছে, উদ্ধারকাজ চলছে এবং নিখোঁজদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। থাই কর্তৃপক্ষও সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে। তারা বলছে, মানব পাচারকারীরা নিয়মিতভাবে এই রুট ব্যবহার করে অভিবাসীদের মালয়েশিয়ায় পাঠায়।  

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই দুর্ঘটনা আবারো প্রমাণ করল যে মানব পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক ভয়ংকরভাবে সক্রিয়। অভিবাসীরা ভালো জীবনের আশায় সবকিছু বাজি রাখছেন, কিন্তু পাচারকারীরা তাদের জীবন নিয়ে খেলছে। সংগঠনগুলো আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, যাতে অভিবাসীদের নিরাপদ পথ নিশ্চিত করা যায়।  

গত কয়েক বছরে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের উপকূলে এ ধরনের নৌকাডুবির ঘটনা বেড়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারের নির্যাতন থেকে পালিয়ে বিপজ্জনক সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। অনেক সময় তারা সপ্তাহের পর সপ্তাহ সমুদ্রে আটকে থাকেন, খাবার ও পানির অভাবে মারা যান।  

মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড সীমান্তে নৌকাডুবি অভিবাসীদের দুর্দশা ও মানব পাচারকারীদের ভয়ংকর বাস্তবতা তুলে ধরেছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নিরাপদ অভিবাসন নীতি ছাড়া এই সংকটের সমাধান অসম্ভব।