ফিলিপাইনের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফাং-ওয়ং’। ইতোমধ্যে এটি সুপার টাইফুনে রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য আঘাতের আগে ১ লাখের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় ৯ নভেম্বর রাতের দিকে এটি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, টাইফুন ফাং-ওয়ং ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে স্থায়ী বাতাস এবং ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া নিয়ে এগোচ্ছে। এর ফলে প্রবল বৃষ্টিপাত, ঝোড়ো হাওয়া ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফিলিপাইনের বিভিন্ন অঞ্চলে ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। লুজন দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সর্বোচ্চ সতর্কতা সংকেত ৫ এবং রাজধানী ম্যানিলা ও আশপাশের এলাকায় ৩ নম্বর সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রোববার রাতেই ফাং-ওয়ং মধ্য লুজনের অরোরা প্রদেশে আঘাত হানতে পারে। এ কারণে ফিলিপাইন সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ৩০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে।

এর আগে টাইফুন ‘কালমায়েগি’ ফিলিপাইনে আঘাত হানে, যার ফলে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওই ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৩০ হাজার বাড়ি, ১৫৭টি হাসপাতাল ও স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় ১৬২টি পৌরসভায় এবং ৮৬টি এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। কৃষি খাতে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় ৪০ মিলিয়ন পেসো।

ফাং-ওয়ংয়ের সম্ভাব্য আঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। সোমবারের সব স্কুলের ক্লাস বাতিল করা হয়েছে অথবা অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় ফাং-ওয়ংয়ের প্রভাব আরো ভয়াবহ হতে পারে। কারণ এটি ইতোমধ্যে সুপার টাইফুনে পরিণত হয়েছে এবং এর গতি ও শক্তি ক্রমাগত বাড়ছে। সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করেছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি সহায়তা ও উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।