দক্ষিণ কোরিয়া ২০২৭ সালের মধ্যে ৩ লাখ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির যে লক্ষ্য নিয়েছিল, তা তারা ২০২৫ সালের আগস্টেই পূরণ করেছে। সরকারের নানা উদ্যোগ, যেমন ভিসা সহজীকরণ, ইংরেজি মাধ্যমে পাঠদান বাড়ানো এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি- এসবই এই সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩ লাখের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী এসেছে ভিয়েতনাম থেকে, যা মোট শিক্ষার্থীর এক-তৃতীয়াংশ। এরপর রয়েছে চীন (২৮%), উজবেকিস্তান, মঙ্গোলিয়া ও নেপাল থেকে আগত শিক্ষার্থীরা।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি প্রোগ্রামে ভর্তি আর বাকিরা কোরিয়ান ভাষা কোর্স বা অন্যান্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ২০২৩ সালে চালু হওয়া ‘Study Korea 300K’ কর্মসূচির আওতায় সরকার D-2 স্টুডেন্ট ভিসার আর্থিক শর্ত শিথিল করে, পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করার সময়সীমা বাড়ায় এবং স্নাতকদের চাকরি খোঁজার সময়সীমাও দীর্ঘ করে।

IES Abroad Seoul-এর পরিচালক কিউসিওক কিম বলেন, “মহামারির পর অনেক এশীয় শিক্ষার্থী ঘরের কাছাকাছি মানসম্মত শিক্ষা খুঁজছিলেন আর কোরিয়া সেই চাহিদা পূরণে সফল হয়েছে।” তিনি আরো বলেন, “K-pop, K-beauty-এর মতো সাংস্কৃতিক আকর্ষণও কোরিয়াকে জনপ্রিয় করেছে।”

তবে এই সাফল্যের পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। একটি জরিপে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষে কোরিয়ায় কাজ করতে চান। কিন্তু অনেকেই চাকরি পেতে সমস্যায় পড়ছেন, কারণ অনেক নিয়োগদাতা ভিসা নিয়ম-কানুন বা বেতন কাঠামো সম্পর্কে সচেতন নন।

এ বছর QS Best Student Cities র‍্যাঙ্কিংয়ে সিউল প্রথম স্থান অর্জন করেছে, যা লন্ডনকে ছাপিয়ে গেছে। যদিও সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, গত দুই বছরে কিছুটা ভর্তির হার কমেছে, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কোরিয়ার জনপ্রিয়তা এখনো শক্ত অবস্থানে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা বাড়বে।