মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশসহ নেপাল, ভারত ও মিয়ানমার থেকে কর্মী নিয়োগে নতুন শর্ত দিয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব দেশের দূতাবাসে চিঠি পাঠিয়ে জানায়, রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা যৌক্তিক করতে তারা ১০টি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে। এই তালিকা আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।
শর্তগুলো হলো:
১. অন্তত পাঁচ বছরের কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা
২. গত পাঁচ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড
৩. অন্তত তিনটি দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা
৪. উৎস দেশে প্রয়োজনীয় সব ধরনের লাইসেন্স থাকা
৫. গন্তব্য দেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভালো কাজের স্বীকৃতি
৬. মানব পাচার, জোরপূর্বক শ্রম, মানি লন্ডারিংসহ কোনো অপরাধে সংশ্লিষ্ট না থাকা
৭. নিজস্ব প্রশিক্ষণ সুবিধা থাকা
৮. পাঁচটি আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে প্রশংসাপত্র
৯. অন্তত ১০ হাজার স্কয়ার ফুটের নিজস্ব অফিস
১০. মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে বৈধভাবে কর্মী পাঠানোর প্রমাণপত্র
এই শর্তে অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি উদ্বিগ্ন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মালিক বলেন, “অনেকেরই এত বড় অফিস নেই, আবার কেউ কেউ মামলা-জটিলতায় আছেন। মন্ত্রণালয়ের উচিত আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।”
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে অতীতে বহুবার জটিলতা দেখা গেছে। ২০০৮ সালে প্রথমবার বন্ধ হয়ে ২০১৬ সালে চালু হয়। ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে আবার বন্ধ হয়। ২০২১ সালে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ২০২২ সালে পুনরায় চালু হয়। সর্বশেষ কর্মী গেছে ২০২৩ সালের ৩১ মে।
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে ২০২৫ সালের মে মাসে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল দেশটিতে সফর করেন। তিনি সব রিক্রুটিং এজেন্সিকে সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান। মালয়েশিয়া তখন জানিয়েছিল, বিষয়টি বিবেচনা করবে।
ব্রিটিশ অধিকারকর্মী এন্ডি হল বলেন, “শর্তগুলো নিরপেক্ষভাবে প্রয়োগ হলে খুব কম এজেন্সিই তা পূরণ করতে পারবে। এটি হয়তো মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের আরেকটি প্রচেষ্টা।”
বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
logo-1-1740906910.png)