জাপানের পার্লামেন্টে দেওয়া তার প্রথম ভাষণে নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি অভিবাসন নীতিতে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ২৪ অক্টোবর তিনি বলেন, জাপানে অভিবাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা হবে। দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকারের সম্ভাব্য নীতিমালা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি অভিবাসন ছাড়াও প্রতিরক্ষা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে দৃঢ় অবস্থান জানান। বার্তা সংস্থা এএফপি সংবাদটি প্রকাশ করে।
তাকাইচি বলেন, চলতি অর্থবছরে জাপান প্রতিরক্ষা খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশ ব্যয় করবে, যা পূর্বঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই বছর আগেই বাস্তবায়িত হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে জাপান তার সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে চায়, বিশেষ করে চীন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সামরিক তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই সানায়ে তাকাইচি চীনবিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত ছিলেন। তার ভাষণে তিনি বলেন, “চীন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সামরিক কর্মকাণ্ড আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এই ঘোষণা এমন সময় এলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন দিনের মধ্যে টোকিও সফরে আসছেন। তিনি জাপানসহ মিত্রদেশগুলোকে সামরিক ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন। জাপান সফরের পর ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন।
তাকাইচি তার ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘নতুন উচ্চতায়’ নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারও করেন। তিনি বলেন, “জাপান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আমাদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অভিবাসন ইস্যুতে তার কঠোর অবস্থান জাপানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দেশটিতে জনসংখ্যা হ্রাস ও শ্রমশক্তির সংকটের কারণে অভিবাসন নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল। তবে তাকাইচি অভিবাসন ব্যবস্থায় কঠোরতা বজায় রেখে জাতীয় নিরাপত্তা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, সানায়ে তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান আরো আত্মনির্ভরশীল ও নিরাপত্তা সচেতন রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে। তার ঘোষণাগুলো দেশটির ভবিষ্যৎ অভিবাসন ও প্রতিরক্ষা নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
logo-1-1740906910.png)