হংকংয়ে অভিবাসী শ্রমিকরা অর্থ পাচার ও প্রতারণার স্বীকার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৬
হংকংয়ে অভিবাসী শ্রমিকদের অর্থ পাচার ও প্রতারণার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পুলিশ ও বিভিন্ন কনস্যুলেট একত্রে সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করেছে। সম্প্রতি কিছু জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে এই ধরনের অপরাধের শিকার হওয়ার প্রবণতা বাড়ায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে হংকং পুলিশের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর প্রধান পরিদর্শক কামি লি কা-ওয়াই জানান, গত বছর থেকেই পুলিশ কনস্যুলেট ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে। তিনি বলেন, “ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা নয়, বরং হংকংয়ের আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা অভিবাসীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে।”
এই সচেতনতা কার্যক্রমে অভিবাসীদের জানানো হচ্ছে কীভাবে অপরাধীরা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অর্থ পাচার করে এবং কীভাবে প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়। অনেক সময় অপরিচিত ব্যক্তির অনুরোধে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার মাধ্যমে অভিবাসীরা ‘মিউল অ্যাকাউন্ট’ জালিয়াতির অংশ হয়ে পড়েন, যা পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ঝুঁকি তৈরি করে।
হংকং মোনেটারি অথরিটি (HKMA), পুলিশ এবং ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ধরনের জালিয়াতি শনাক্ত ও প্রতিরোধে কাজ করছে। Scameter নামক একটি ডেটা বিশ্লেষণ টুল এবং নেটওয়ার্ক অ্যানালিটিকসের মাধ্যমে সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হচ্ছে।
২০২৪ সালে হংকংয়ে প্রতারণার ঘটনা ১১.৭% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৪৪ হাজার ৪৮০টি অভিযোগ রেকর্ড হয়েছে। একই বছরে ১০ হাজার ৪৯৬ জনকে অর্থ পাচার ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া আইন সংশোধনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর মধ্যে তথ্য বিনিময় সহজ করা হয়েছে, যাতে দ্রুত প্রতারণা শনাক্ত ও প্রতিরোধ সম্ভব হয়। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের অ্যাকাউন্ট অপরাধীদের হাতে তুলে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে হংকং সরকার অভিবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। অভিবাসীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা যেন কোনো আর্থিক লেনদেন বা অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে সতর্ক থাকেন এবং সন্দেহজনক কিছু হলে দ্রুত পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানান।
logo-1-1740906910.png)