যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষ কর্মী ভিসার বিকল্প হতে পারে চীনের 'কে-ভিসা'

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৮

যুক্তরাষ্ট্রে 'এইচ-১বি' ভিসার ফি ১ লাখ ডলার নির্ধারণের পর বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি ও গবেষণা খাতে কর্মরত পেশাজীবীদের মধ্যে নতুন গন্তব্য হিসেবে চীনের 'কে-ভিসা' নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। চীন চলতি বছরের আগস্টে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রতিভাবান বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে 'কে-ভিসা' চালুর ঘোষণা দেয়, যা অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।
চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার তথ্য অনুযায়ী, 'কে-ভিসা' চীনের প্রচলিত ১২ ধরনের ভিসার বাইরে একটি বিশেষ ব্যবস্থা। এই ভিসায় আবেদনকারীরা চাকরির অফার ছাড়াই চীনে প্রবেশ করতে পারবেন এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে কাজ করার পাশাপাশি ব্যবসা ও শিল্প স্থাপন করতে পারবেন।
বিশেষ সুবিধা হিসেবে 'কে-ভিসা'র আবেদনকারীদের জন্য চীনে বসবাস, সময়সীমা ও কাজের সুযোগে নমনীয়তা থাকবে। সদ্য স্নাতক, গবেষক ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপযোগী। আবেদনকারীদের অবশ্যই নির্ধারিত বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, 'কে-ভিসা' মূলত ২০১৩ সালে চালু হওয়া 'আর-ভিসা'র বিস্তৃত সংস্করণ। চীন দীর্ঘদিন ধরেই প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ, ধাতুবিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরভিন্দ ইয়েলেরি জানান, চীন ইতোমধ্যে সাংহাই ও সেনজেনসহ বিভিন্ন প্রদেশে টেকনোলজি পার্ক গড়ে তুলেছে এবং ২০০৬ সাল থেকেই ভারতের আইআইটি থেকে প্রকৌশলী নিয়োগ করছে। তার মতে, ভারতীয় প্রকৌশলীরা চীনের প্রযুক্তি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, চীনের 'এক জানালা নীতি' আবেদন থেকে নিয়োগ পর্যন্ত প্রক্রিয়াকে দ্রুত ও সহজ করে তোলে। বিদেশি বিশেষজ্ঞদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থাও দ্রুত সম্পন্ন হয়।
তাইওয়ানও প্রযুক্তিবিদদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। ফলে যারা যুক্তরাষ্ট্রে 'এইচ-ওয়ান-বি' ভিসা পাবেন না, তারা চীন বা তাইওয়ানকে বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর ভিসা নীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মার্কিন প্রযুক্তি খাত, আর তার সুফল পেতে পারে চীনসহ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতিগুলো। 'কে-ভিসা' তাই শুধু একটি ভিসা নয়, বরং বৈশ্বিক প্রতিভা আকর্ষণের কৌশল।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা