
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা এবার পর্যটনশিল্পে বড় ধরনের রূপান্তরের পথে হাঁটছে। শান্ত সমুদ্র, প্রাচীন বৌদ্ধ নিদর্শন ও নিরিবিলি পরিবেশের জন্য আগে থেকেই জনপ্রিয় এই দেশ এবার নিজেকে দক্ষিণ এশিয়ার ‘লাস ভেগাস’ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে সম্প্রতি কলম্বোতে এক বিলিয়ন ডলারের ‘সিটি অব ড্রিমস’ ক্যাসিনো রিসোর্ট উদ্বোধন করে বলেন, “শ্রীলঙ্কার জন্য শুরু হলো এক নতুন যুগ।” এই বিলাসবহুল রিসোর্টে রয়েছে ৮০০ হোটেলকক্ষ, ২০টির বেশি রেস্তোরাঁ ও বার এবং একটি শপিং মল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলিউড তারকা হৃতিক রোশন পারফর্ম করেন।
দিশানায়েকে আশা করছেন, এই রিসোর্ট ভারত ও চীনের ধনী পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে এবং পর্যটকসংখ্যা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। ব্ল্যাকজ্যাক, ব্যাকারার মতো আন্তর্জাতিক ক্যাসিনো গেমের মাধ্যমে বিদেশি পর্যটকরা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।
২০২২ সালে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কা আইএমএফ থেকে বড় অঙ্কের ঋণ সহায়তা নেয়। বর্তমানে পর্যটন খাত দেশটির জিডিপির প্রায় ৪ শতাংশ। সরকার মনে করছে, ক্যাসিনো পর্যটনের মাধ্যমে এই খাত আরো শক্তিশালী হবে।
শ্রীলঙ্কার এই উদ্যোগ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার ইঙ্গিত দেয়। থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন, আজারবাইজান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক দেশই ক্যাসিনো পর্যটনে বিনিয়োগ করছে। এমনকি মিসর ও উত্তর কোরিয়ার মতো রক্ষণশীল দেশেও বিদেশিদের জন্য ক্যাসিনো চালু রয়েছে।
তবে লাস ভেগাস বা ম্যাকাওয়ের মতো বিশ্বমানের পর্যটন গন্তব্যে পৌঁছানো সহজ নয়। এই শহরগুলো বছরে ৮ কোটির বেশি পর্যটক টানে এবং প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার আয় করে। শুধু ক্যাসিনো নয়, কনসার্ট, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক উৎসব ও বিলাসবহুল হোটেল মিলিয়ে তারা পূর্ণাঙ্গ বিনোদন কেন্দ্র।
শ্রীলঙ্কার বড় সুবিধা হলো, এটি ভারত ও চীনের মতো বিশাল বাজারের কাছাকাছি। যদিও ভারতে জুয়া খেলার আইন কঠোর, তবু চাহিদা রয়েছে। চীন দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্যাসিনো পর্যটনের বড় উৎস।
তথ্যসূত্র: দৈনিক আজকের পত্রিকা