
নেপালে সাম্প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশটির পর্যটন খাত বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। ভরা মৌসুমে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ, যা দেশটির অর্থনীতির জন্য গভীর সংকট তৈরি করেছে।
বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৭০ জনের বেশি প্রাণহানি ও ২ হাজারের অধিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে সরকারি ভবন ও হোটেলে আগুন দেওয়া হয়। এসব ঘটনার ছবি ও ভিডিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নেপালকে ঝুঁকিপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করছে অনেক দেশ। ফলে তারা তাদের নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়েছে।
সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নেপালের পর্যটনের ভরা মৌসুম। সাধারণত এই সময় লাখ লাখ বিদেশি হিমালয় ট্রেকিং ও অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণের জন্য দেশটিতে আসেন। কিন্তু এবার থামেলসহ জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলো প্রায় ফাঁকা। হোটেল-রেস্তোরাঁয় বুকিং বাতিলের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮-১০ শতাংশে। একাধিক হোটেল মালিক জানিয়েছেন, আগামী মাসের সব বুকিং বাতিল হয়ে গেছে, ফলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।
নেপালে প্রতি বছর প্রায় ১২ লাখ পর্যটক ভ্রমণে যান এবং পর্যটন খাত থেকে দেশটি জিডিপির প্রায় ৮ শতাংশ আয় করে। কিন্তু চলমান সহিংসতার কারণে সেই খাত এখন বড় সংকটে। নেপাল পর্যটন বোর্ড জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এবার পর্যটকসংখ্যা ৩০ শতাংশ কমেছে।
তবে কিছু বিদেশি পর্যটক জানিয়েছেন, তারা নেপালে অবস্থান করলেও নিরাপদই অনুভব করছেন। এতে ধারণা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেশটি আবারো পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে।
বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করছেন সুশীলা কার্কি। তিনি শান্তি ফিরিয়ে আনা ও ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ করছেন। আগামী ৫ মার্চ দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পর্যটন খাত পুনরুদ্ধার অনেকটাই নির্ভর করছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসার ওপর।
তথ্যসূত্র: দৈনিক আজকের পত্রিকা