
মালয়েশিয়ায় ২০২৫ সালের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন হয়েছে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে, যেখানে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে জাতীয় গর্ব, ঐক্য এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উচ্ছ্বাস। ৩১ আগস্ট রোববার পুত্রজায়ার দাতারান প্রাঙ্গণে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, যিনি এবারের “হিউম্যান গ্রাফিক্স” প্রদর্শনীকে মালয়েশিয়ার ইতিহাসে “সেরা” বলে অভিহিত করেছেন।
এই ব্যতিক্রমধর্মী পারফরম্যান্সে অংশ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২ হাজার স্কুল শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের শরীরের বিন্যাসে তৈরি করেছে জাতীয় পতাকা, প্রতীক এবং ঐতিহাসিক বার্তা, যা মালয়েশিয়ার তরুণ প্রজন্মের দেশপ্রেম ও সৃজনশীলতার প্রতিফলন। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “আমি এই শিশুদের নিয়ে গর্বিত। এটি মালয়েশিয়ার ইতিহাসে সেরা পারফরম্যান্স।”
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৫০০ মিটার হেঁটে জনতার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তার সঙ্গে ছিলেন উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমাদ জাহিদ হামিদি ও ফাদিল্লাহ ইউসুফ। তারা দর্শকদের সঙ্গে ছবি তোলেন, করমর্দন করেন এবং শিশু, প্রবীণ ও পর্যটকদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে সময় কাটান।
এবারের জাতীয় দিবসের মূল আয়োজনের পাশাপাশি মালয়েশিয়ার বিভিন্ন রাজ্যে হয়েছে আলাদা আলাদা কুচকাওয়াজ ও সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী। কেদাহ, পেনাং, পেরাক, কেলান্তান, পাহাং, তেরেংগানু ও অন্যান্য রাজ্যে স্থানীয় ঐতিহ্য ও সামরিক দক্ষতার প্রদর্শনী ছিল চোখে পড়ার মতো। যেমন, পাহাংয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আগুনের রিংয়ের মধ্য দিয়ে লাফিয়ে চমকপ্রদ কসরত দেখান, আর তেরেংগানুতে “উলেক মায়াং” সুরের সঙ্গে উদ্ধার অভিযানের প্রদর্শনী হয়।
এবারের আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল “Malaysia MADANI: Rakyat Disantuni” অর্থাৎ “মানবিক মালয়েশিয়া: জনগণের প্রতি সহানুভূতি”। এতে অংশ নিয়েছে ১৪ হাজার জনের বেশি অংশগ্রহণকারী, ৭৮টি যানবাহন, সাতটি সুসজ্জিত ফ্লোট এবং একটি বর্ণাঢ্য বিমান প্রদর্শনী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান ইব্রাহিম ও রাজার স্ত্রী রাজা জারিথ সোফিয়া।
দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল এক লাখেরও বেশি। মালয়েশিয়ার স্বাধীনতা দিবস এবার শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং জাতীয় ঐক্য, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির এক অনন্য উদযাপন হয়ে উঠেছে।
তথ্যসূত্র: নিউ স্ট্রেইট টাইমস