
মালয়েশিয়া আজ অর্থনীতিকে টেকসই ও উচ্চ আয়ের ভিত্তিতে রূপান্তরের পথে। বিশেষ করে সবুজ প্রযুক্তি ও ডিজিটাল রূপান্তর খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে দেশের শ্রমবাজারে নতুন ধরনের কর্মসংস্থানের চাহিদা তৈরি হয়েছে। এ পরিবর্তন শুধু প্রযুক্তিগত নয়, বরং তা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কাঠামো ও জনবল ব্যবস্থাপনায় এক যুগান্তকারী প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।
২০২৫ সালে অর্থনীতির এই খাতগুলো দেশের জিডিপির প্রায় ৬০ শতাংশ (৯৩৩ বিলিয়ন রিংগিত) অবদান রেখেছে এবং বর্তমানে ৩১ শতাংশ দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মী এই সেক্টরে নিয়োজিত। অথচ ট্যালেন্ট কর্প মালয়েশিয়ার সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, আগামী কয়েক বছরে প্রায় ৬.২ লাখ কর্মসংস্থান বিলুপ্ত কিংবা রূপান্তরের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং ১.৮ মিলিয়ন জনবলকে পুনঃপ্রশিক্ষণ দিতে হবে, যাতে তারা নতুন প্রযুক্তিগত চাহিদার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন।
সরকার ইতোমধ্যে মাই মাহির নামে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে, যেখানে চাকরি, প্রশিক্ষণ কোর্স ও দক্ষতা অর্জনের পথ বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি ২০২৬ সালে একাডেমি কেসুমা নামে নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যা কর্মশক্তিকে নতুন যুগোপযোগী দক্ষতায় প্রস্তুত করতে সহায়ক হবে।
প্রতি বছর মালয়েশিয়ায় ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে, বিশেষ করে আইসিটি, রিনিউএবল এনার্জি, স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং, এগ্রোটেক, মেডিকেল ডিভাইস ও ফুড প্রসেসিং খাতে। এই খাতগুলো শুধু চাকরি নয়, বরং সাসটেইনেবল উন্নয়ন, জলবায়ু সচেতনতা ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের কেন্দ্র হয়ে উঠছে।
সরকারের রূপান্তরকেন্দ্রিক এই নীতি অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারের জন্য যেমন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে, তেমনই বিদেশে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়িয়ে মালয়েশিয়ার কর্মক্ষমতাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করছে। তবে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে প্রয়োজন সুশৃঙ্খল পুনঃপ্রশিক্ষণ, দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শ্রমবাজারের সঙ্গে নীতিগত সমন্বয়।
তথ্যসূত্র: দ্য ইনভেস্টর