
মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াকে আরো আধুনিক ও কার্যকর করতে যুক্ত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেটেড ইমিগ্রেশন সিস্টেম (এনআইআইএসই) বা জাতীয় সমন্বিত অভিবাসন ব্যবস্থা নামে ব্যবস্থাটি ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক জাকারিয়া শাবান।
১০ জুলাই দেশটির টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে এই কর্মকর্তা জানান, ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেটেড ইমিগ্রেশন সিস্টেমের প্রথম ধাপে একটি অ্যাডভান্সড প্যাসেঞ্জার স্ক্রিনিং সিস্টেম (এপিএসএস) অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এই সিস্টেম যাত্রীদের তাদের নিজ অঞ্চল থেকেই প্রোফাইল মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবে, যার মধ্যে অপরাধমূলক ইতিহাস এবং ভিসা স্ট্যাটাসও থাকবে, যা তাদের মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর আগেই সম্পন্ন হবে।
এই অভিবাসন কর্মকর্তা আরো জানান, এই সিস্টেমের অধীনে উপদ্বীপ মালয়েশিয়ার পুত্রজায়া, সাবাহর কোটা কিনাবালু এবং সারওয়াকের কুচিংয়ে তিনটি কমান্ড সেন্টার স্থাপন করা হবে। যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে রিয়েল-টাইমে সমস্ত অভিবাসন-সম্পর্কিত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে।
জাকারিয়া শাবান বলেন, যেহেতু সিস্টেমটি অন্যান্য সংস্থার সাথে একীভূত হবে, আমরা দেশের মধ্যে চলাচল আরো কার্যকরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারব, যার মধ্যে প্রবেশপথ ও আটককেন্দ্রগুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে আইন প্রয়োগকারী পদক্ষেপের সময়ও এটি সহায়ক হবে।
তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যদি কর্মকর্তারা কোনো ব্যক্তির অবস্থান নির্ধারণ করতে না পারেন, তবে কমান্ড সেন্টার তাদের সহায়তা করবে। এছাড়া শরণার্থী নিবন্ধন নথি (ডিপিপি) উদ্যোগটিও বর্তমানে সিস্টেম সংগ্রহের পর্যায়ে রয়েছে। বিভাগের কাছে তাদের ডিপোগুলোতে থাকা সমস্ত শরণার্থীর ডেটা রয়েছে, যা সিস্টেম প্রস্তুত হয়ে গেলে রেজিস্ট্রিভুক্ত করা যাবে।
ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেটেড ইমিগ্রেশন সিস্টেম (এনআইআইএসই), যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও স্মার্ট ডেটা ইন্টিগ্রেশনের উপর ভিত্তি করে তৈরি, প্রবেশপথগুলোকে এমন একটি অটোগেট সিস্টেমের মাধ্যমে উন্নত করবে, যা প্রত্যেক ভ্রমণকারীকে মাত্র তিন থেকে চার সেকেন্ডে প্রক্রিয়া করতে পারবে।
এছাড়া বডি ক্যামেরা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত স্মার্ট সিসিটিভি ব্যবহার রিয়েল-টাইমে আচরণগত বিশ্লেষণ সক্ষম করবে, যার মধ্যে ভ্রমণকারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে অস্বাভাবিক মিথস্ক্রিয়া বা ক্ষমতার সম্ভাব্য অপব্যবহার শনাক্তকরণও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তিনি আরো জানান, অভিবাসন বিভাগ ভিসা আবেদন এবং ভ্রমণনথি পরিষেবাগুলো পরিচালনা করার জন্য চ্যাটবট ও ইন্টার্যাক্টিভ অটোমেশন ব্যবহার করছে। মাইভিসা, ইভিসা, ইপাস, মাই অনলাইন পাসপোর্ট, মাই এক্সপ্যাটস এবং অন্যান্য ডিজিটাল সিস্টেমে এখন অটোমেশন উপাদানগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইন্টিগ্রেশনের পথ প্রশস্ত করে।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেটেড ইমিগ্রেশন সিস্টেম (এনআইআইএসই) মালয়েশিয়ার অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে, যা দেশের নিরাপত্তা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তথ্যসূত্র: সময় টিভি