
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনে উন্মোচিত হতে যাচ্ছে এক নতুন দিগন্ত। ইউরোপের শেনজেন ভিসার আদলে এক ভিসায় ছয়টি দেশে ভ্রমণের সুযোগ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে থাইল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এই উদ্যোগের আওতায় চালু হতে যাচ্ছে “ছয় দেশ, এক গন্তব্য” নামের একটি অভিন্ন পর্যটন ক্যাম্পেইন, যা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অভিজ্ঞতাকে করবে আরো সহজ, উপভোগ্য ও স্মরণীয়।
এই প্রকল্পে বর্তমানে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম যুক্ত হয়েছে। ষষ্ঠ দেশের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। থাইল্যান্ড বিজনেস নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে পর্যটকরা একটি দেশ থেকে আরেকটিতে সহজে ও নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন। তাদের জন্য থাকবে বিশেষ প্যাকেজ ট্যুর, বিলাসবহুল জাহাজ ভ্রমণ এবং ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থান ঘুরে দেখার সুযোগ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ক্যাম্পেইনের আওতায় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার পেনাং, থাইল্যান্ডের ফুকেট এবং ভিয়েতনামের হোচিমিন সিটিকে একসঙ্গে সংযুক্ত করা হবে একটি বিলাসবহুল ক্রুজ বা জাহাজ সফরের মাধ্যমে। পাশাপাশি থাকছে স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও বৈচিত্র্যময় খাবার উপভোগ করার সুযোগ। পর্যটকরা চাইলে নিজে গাড়ি চালিয়ে নির্দিষ্ট দেশগুলো ঘুরে দেখতে পারবেন। উৎসবকালীন সময়ে দেশগুলোর বিশেষ সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য থাকবে আলাদা ভ্রমণ আয়োজন।
এই প্রকল্পের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো যৌথ ভিসা চালুর পরিকল্পনা, যার ফলে একবার ভিসা নিলে ক্যাম্পেইনের অংশগ্রহণকারী সব দেশে যাতায়াত করা যাবে। এটি হবে ইউরোপের শেনজেন ভিসার অনুরূপ। পাশাপাশি ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে থাকবে বিশেষ লেন, যা যাতায়াতকে করবে আরও আরামদায়ক ও সময়সাশ্রয়ী।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় থাকছে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট প্যাকেজ। বিশ্বমানের খাবার এবং বিখ্যাত হোটেলে থাকার সুবিধা একসঙ্গে প্যাকেজ আকারে উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। ক্যাম্পেইনটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ২০২৫ সালের শেষ দিকে। প্রাথমিকভাবে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো এতে যুক্ত হবে।
এই অভিন্ন পর্যটন প্রকল্প কেবল পর্যটনের প্রসারই নয়, বরং অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গঠিত একটি যৌথ কমিটি এর সার্বিক তদারকির দায়িত্বে থাকবে। সফল হলে এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভ্রমণকে আরো সহজ, আকর্ষণীয় ও বহুমাত্রিক করে তুলবে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ