ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনায় অভিবাসী শ্রমিকদের প্রস্থান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ২১:৫৬

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনা এবং সাম্প্রতিক সামরিক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে হাজার হাজার অভিবাসী শ্রমিক নিরাপত্তাহীনতার কারণে বিভিন্ন রাজ্য থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। এই পরিস্থিতি ভারতের বিভিন্ন শিল্প, কৃষি, পর্যটন, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
শিল্প খাতে প্রভাব
জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও গুজরাটের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ-
জম্মু ও কাশ্মীর: হোটেল ও পর্যটন খাতে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ৫০ শতাংশ অভিবাসী শ্রমিক ছিলেন, যারা বর্তমানে ফিরে গেছেন।
লাসিপোরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ সেন্টার (কাশ্মীর): প্রায় ৬ হাজার শ্রমিকের মধ্যে অধিকাংশই চলে যাওয়ায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতি উৎপাদন ব্যাহত, বাজারে অস্থিরতা এবং শ্রমিকদের পুনর্বাসনে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
কৃষি খাতে প্রভাব
কৃষি খাতেও অভিবাসী শ্রমিকদের প্রস্থানে প্রভাব পড়েছে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানার ধান চাষের মৌসুমে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ফসল কাটার জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক না পাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
পর্যটন খাতে প্রভাব
সীমান্ত উত্তেজনার কারণে পর্যটকরা নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছেন। ফলে পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটক সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
পরিবহন খাতে প্রভাব
সীমান্ত উত্তেজনার কারণে পণ্য পরিবহনে বিলম্ব হচ্ছে। গুজরাট, পাঞ্জাব ও জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে পণ্য পরিবহন স্লোডাউন হয়েছে, যা উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে প্রভাব ফেলছে।
বাজারজাতকরণ খাতে প্রভাব
শ্রমিক সংকট ও পরিবহন সমস্যার কারণে বাজারজাতকরণ খাতেও প্রভাব পড়ছে। পণ্য সরবরাহে বিলম্ব হচ্ছে, যা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
অভিবাসী শ্রমিকদের প্রস্থান
অভিবাসী শ্রমিকরা মূলত পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যা ও উত্তরপ্রদেশ থেকে এসেছেন। তারা সীমান্ত উত্তেজনার কারণে নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করে বাড়ি ফিরে গেছেন। শ্রমিকদের প্রস্থানে শিল্প খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে।
ব্যবসায়িক প্রতিক্রিয়া
অনেক প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সীমান্ত উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় শ্রমিকদের ফিরে আসা অনিশ্চিত। বিভিন্ন শিল্প সংগঠন সরকারকে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা কেবল রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও গভীর প্রভাব ফেলছে। শিল্প, কৃষি, পর্যটন, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস