বতসোয়ানা ও দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন নাগরিকত্ব কর্মসূচি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২১

আফ্রিকার দুই দেশ বতসোয়ানা ও দক্ষিণ আফ্রিকা সম্প্রতি নতুন নাগরিকত্ব কর্মসূচি চালু করেছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য অর্থনীতিকে হীরার ওপর নির্ভরতা থেকে সরিয়ে বহুমুখী উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়া। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিদেশি দক্ষ পেশাজীবী, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের নাগরিকত্বের সুযোগ দেওয়া হবে, যাতে তারা স্থানীয় শিল্প, প্রযুক্তি ও সেবা খাতে অবদান রাখতে পারেন।
বতসোয়ানা, যারা দীর্ঘদিন ধরে হীরা রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল; এখন চায় প্রযুক্তি, পর্যটন, কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবার মতো খাতে বৈচিত্র্য আনতে। দেশটির সরকার মনে করছে, বিদেশি নাগরিকদের অংশগ্রহণে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং স্থানীয় দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ বাড়বে।
নতুন কর্মসূচির আওতায় বতসোয়ানায় নাগরিকত্ব পেতে হলে আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হবে, স্থানীয় কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের পরিকল্পনা থাকতে হবে। একইভাবে দক্ষিণ আফ্রিকাও তাদের অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন এনে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশিদের জন্য নাগরিকত্বের পথ সহজ করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা প্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নির্মাণ খাতে আন্তর্জাতিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চায়। দেশটির অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় বিদেশি বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনকে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ আফ্রিকার অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারে নতুন গতি আনবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশগুলোর অবস্থান আরো শক্তিশালী করবে। তবে নাগরিকত্বের শর্ত ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে স্থানীয় জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি বা অসন্তোষ না তৈরি হয়।
এই কর্মসূচি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্যও আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে যারা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে আফ্রিকায় কাজ করতে চান। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের পেশাজীবীরা এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন।
বতসোয়ানা ও দক্ষিণ আফ্রিকার এই পদক্ষেপকে অনেকেই ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’র অংশ হিসেবে দেখছেন, যা ভবিষ্যতে আফ্রিকার অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। হীরার বাইরে অর্থনীতিকে বিস্তৃত করতে নাগরিকত্বকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার এখন নতুন বাস্তবতা।
তথ্যসূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস