
লিবিয়া থেকে নতুন করে ১৬১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। চলতি আগস্ট মাসে এ নিয়ে তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো। শুক্রবার আইওএমের (আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা) সহায়তায় বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা ঢাকায় পৌঁছান।
বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, ফেরত পাঠানো অভিবাসীরা পূর্ব লিবিয়ার গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন। দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দল বেনিনা বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে তাদের বিদায় জানান এবং নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানান, যাচাই-বাছাই শেষে অভিবাসীদের জন্য ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হয়। এরপর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং আইওএমের সহযোগিতায় বিনা খরচে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করা হয়। এর আগে ২০ আগস্ট একই ডিটেনশন সেন্টার থেকে আরো ১৭৫ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত আইওএমের সহায়তায় মোট ৫ হাজার ৭১৭ জন বাংলাদেশিকে লিবিয়া থেকে নিরাপদে দেশে ফেরানো হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে এই সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে।
আইওএমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে তাদের স্বেচ্ছাপ্রত্যাবাসন কর্মসূচির আওতায় এক লাখ অভিবাসীকে লিবিয়া থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই কর্মসূচির প্রধান অর্থায়নকারী, পাশাপাশি ইতালি, যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ের সহায়তাও রয়েছে।
এই কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত আফ্রিকা ও এশিয়ার ৪৯টি দেশে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ফেরত যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ৭৩ হাজার পুরুষ, ১৭ হাজার নারী এবং ১০ হাজারের বেশি শিশু রয়েছে; অনেক শিশুই অভিভাবকবিহীন।
২০১১ সালে গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়ায় নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলা বাড়ে। মানব পাচারকারী চক্র এই সুযোগে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের ইউরোপে পাঠানোর নামে শোষণ করে। অনেকেই সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারান।
২০২৫ সালে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ১ হাজার ১২৬ জন অভিবাসী নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৬ সাল থেকে এই সংখ্যা ৩২ হাজার ৬০০ ছাড়িয়েছে।
তথ্যসূত্র: ইনফো মাইগ্র্যান্টস